পজিটিভবিডি২৪ডটনিউজ (ঢাকা): প্রধানমন্ত্রীশেখহাসিনাখ্রিষ্টীয়নতুনবছরউপলক্ষ্যেদেশবাসীকেশুভেচ্ছাজানিয়েবলেছেন, ‘আজআমরাযেসময়কেপেছনেফেলেনতুনদিনেরআলোয়উদ্ভাসিতহতেযাচ্ছি, সেসময়েরযাবতীয়অর্জনআমাদেরসম্মুখযাত্রারশক্তিশালীসোপানহিসেবেকাজকরছে।তাইনতুনবছরেরএইমাহেন্দ্রক্ষণসকলচ্যালেঞ্জমোকাবিলাকরেনতুননতুনসম্ভাবনাকেকাজেলাগিয়েউন্নতিরনতুনশিখরেআরোহণেরসোপানরচনাকরারঅনুপ্রেরণা।’ খ্রিষ্টীয় নতুন বছর–২০২৪ উপলক্ষ্যে আজ রোববার দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘নতুন বছরে মানুষে–মানুষে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরো জোরদার হোক, সকল সংকট দূরীভূত হোক, সকল সংকীর্ণতা পরাভূত হোক এবং সকলের জীবনে আসুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি এই প্রার্থনা করি।’ ২০২৩ সাল বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নের এক স্বর্ণযুগ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গত ২০২২ সালের ২৫ জুন নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর সেতুতে রেল যোগাযোগের শুভ উদ্বোধন করেছি। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা–আগারগাঁও রুটে মেট্রোরেল চালুর পর ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল সেবা সম্প্রসারণ করেছি।’ আমাদের অন্যান্য মেগা ও মাঝারিসহ সকল অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজও পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু করেছি। ৫ অক্টোবর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহ করেছি। ফলে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবহারকারী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। ৭ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল এবং ১৯ অক্টোবর দেশের ৩৯টি জেলায় ১৫০টি সেতু এবং ১৪টি ওভারপাস একসাথে উদ্বোধন করেছি। ২৮ অক্টোবর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম চট্টগ্রামে কর্ণফুলি নদীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দিয়েছি। ১১ নভেম্বর দোহাজারী–কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ঢাকা–কক্সবাজার সরাসরি রেল চালু করেছি।’ শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করে। আমরা ২০০৮ সালের নির্বাচন হতে পরপর তিন দফা জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে গত ১৫ বছরে আর্থ–সামাজিক উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করেছি। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের অর্থনীতিও কিছুটা মন্থর হয়েছিল। সেই ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতে ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক অবরোধ ও পাল্টা অবরোধ সারা পৃথিবীতে নিরীহ মানুষের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এরই মধ্যে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছি। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই দেশের যেকোনো সংকট আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সাথে ছিটমহল বিনিময় করেছি। মিয়ানমারে গণহত্যা থেকে আত্মরক্ষার্থে পালিয়ে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছি। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দেশের ৩৩টি জেলাকে ভূমিহীন–গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছি। শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় নিয়ে এসেছি। প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং বিনামূল্যে ৩০ প্রকারের ঔষধ দিচ্ছি। ২ কোটি ১০ লাখ কৃষককে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদান করেছি। ২ কোটি ৫৩ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি–উপবৃত্তি দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট চারটি ক্যাটেগরিতে ১০ কোটি মানুষের জন্য সার্বজনীন পেনশন চালু করেছি। আওয়ামী লীগ সরকার ২০১০ সাল থেকে বছরের প্রথম দিন ছাত্রছাত্রীদের হাতে বিনামূল্যে বই পৌঁছে দিচ্ছে। এই বই উৎসব বাংলাদেশে ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপনের ক্ষেত্রেও এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। ‘বাংলাদেশব–দ্বীপপরিকল্পনা–২১০০’ বাস্তবায়নশুরুকরেছিজানিয়েতিনিবলেন, আমরাডিজিটালবাংলাদেশপ্রতিষ্ঠাকরেছি, চতুর্থশিল্পবিপ্লবেরউপযোগীদক্ষজনসম্পদসৃষ্টিকরছিএবংগ্রামীণঅর্থনীতিকেশক্তিশালীকরছি।২০২১সালেজাতিরপিতারজন্মশতবার্ষিকীএবংস্বাধীনতারসুবর্ণজয়ন্তীউদ্যাপনেরসময়জাতিসংঘবাংলাদেশকেউন্নয়নশীলদেশঘোষণাকরেছে।আমরা২০৩১সালেরমধ্যেউচ্চ–মধ্যমআয়েরদেশএবং২০৪১সালেরমধ্যেউন্নত–সমৃদ্ধ ‘স্মার্টবাংলাদেশ’ গড়েতোলারলক্ষ্যেকাজশুরুকরেদিয়েছি। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলেই দেশের উন্নয়ন হয় এবং জনগণের মঙ্গল হয়। কারণ, একমাত্র আওয়ামী লীগই স্বাধীনতার সুমহান আদর্শকে ধারণ করে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করে। দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন আমরা মানুষের সার্বিক কল্যাণে আত্মনিয়োগ করি, অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিহত করে মানুষের জানমাল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করি এবং সর্বোপরি গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান–এর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলি। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মহান নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান–এর নেতৃত্বে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানিদের পরাজিত করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করি। স্বাধীনতা অর্জনের পর মাত্র নয় মাসেই তিনি আমাদের একটি সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ সংবিধান অনুযায়ী স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং ৭ এপ্রিল প্রথম অধিবেশন বসেছিল। ২০২৩ সালের ৬ এপ্রিল মহান জাতীয় সংসদের ৫০ বছরপূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষ্যে ২২তম/বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই অধিবেশনে আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শূন্য হাতে সদ্যস্বাধীন দেশকে যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ থেকে টেনে তুলেছিলেন। তখন ব্যাংকে কোন রিজার্ভ মানি ছিল না, কোনো কারেন্সি নোট ছিল না। সেই অবস্থায় গণতন্ত্রের মজবুত ভিত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করেছিলেন। শেখ হাসিনা বলেন, প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরকার গঠনের পর ১৯৭৩ সালের ১ জুলাই থেকে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরেই তিনি বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেছিলেন এবং জাতিসংঘসেই স্বীকৃতি দিয়েছিল।