মঙ্গলবার, ১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মীর মুনাফা সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালের রায় হাইকোর্টে বাতিল

গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মীর মুনাফা সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালের রায় হাইকোর্টে বাতিল

পজিটিভ বিডি ২৪ডট নিউজ (ঢাকা): গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মীর শ্রমিক কল্যাণ তহবিল ও শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল থেকে মুনাফা পাওয়ার অধিকারী বলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায় বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ রায় দেন।
এ সংক্রান্ত রিটের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, শ্রম আইনের ২৩১ ধারা অনুসারে মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে কোনো চুক্তি হলে বা অ্যাওয়ার্ড বিষয়ে মতপার্থক্য হলে-এর ব্যাখ্যার জন্য সরাসরি শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ আছে। যেহেতু এ ক্ষেত্রে মালিক ও কর্মীর মধ্যে কোনো চুক্তি হয়নি, এ বিষয়ে স্বাক্ষর হয়নি, তাই আপিল ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার সুযোগ নেই। আপিল ট্রাইব্যুনাল এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে রায় দিয়েছেন। আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল করে আজ রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ কল্যাণের চেয়ারম্যান। গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মী শ্রমিক কল্যাণ তহবিল ও শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল থেকে মুনাফা (২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত) পেতে শ্রম আইনের ২৩১ ধারায় শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা (ব্যাখ্যামূলক) করেছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ এপ্রিল শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল রায় দেন। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাইকোর্টে রিটটি করেন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৩১ মে হাইকোর্ট রুল দিয়ে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায়ে ছয় মাসের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেন। রুলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
এরপর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে সাবেক ১০৬ কর্মীর আপিল বিভাগে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ জুন আপিল বিভাগের চেম্বারকোর্ট স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে হাইকোর্ট দেয়া আদেশ স্থগিত করেন। পাশাপাশি আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। গত ১০ জুলাই আপিল বিভাগ এ-সংক্রান্ত রুল হাইকোর্টে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন।
হাইকোর্টে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, আবদুল্লাহ আল মামুন ও খাজা তানভীর আহমেদ। ১০৬ কর্মীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও আইনজীবী গোলাম রাব্বানী শরীফ।
আইনজীবী গোলাম রাব্বানী শরীফ জানান, হাইকোর্টের আজকের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে।
আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ১০৬ কর্মী চাকরিতে ছিলেন। ২০১৩ সালের সংশোধিত শ্রম আইনে সব প্রতিষ্ঠানের কর্মীকে মুনাফা দেয়ার বিধান রাখা হলেও এর ভূতাপেক্ষ (২০১৩ সালের আগে) কার্যকারিতা দেয়া হয়নি। যে কারণে ২০০৬ ও ২০১৩ সালের আইন অনুসারে তারা মুনাফা পাওয়ার অধিকারী নন। অথচ, ২০০৬ সাল থেকে ওই কর্মীরা শ্রমিককল্যাণ তহবিল ও শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিলের মুনাফা পাওয়ার অধিকারী বলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল রায় দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়।

CATEGORIES
Share This

COMMENTS