রবিবার, ১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আসালঙ্কার সেঞ্চুরিতে শ্রীলংকার সংগ্রহ ২৭৯ রান

পজিটিভ বিডি ২৪ডট নিউজ: মিডল অর্ডার ব্যাটার চারিথ আসালঙ্কার সেঞ্চুরিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের অষ্টম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৪৯ দশমিক ৩ ওভারে ২৭৯ রানে অলআউট হয়েছে শ্রীলংকা। ১০৫ বলে ১০৮ রান করেন বাঁ-হাতি ব্যাটার আসালঙ্কা। বাংলাদেশের তানজিম হাসান সাকিব ৮০ রানে ৩ উইকেট নেন।
দিল্লিতে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে উইকেট শিকারের আনন্দে ভাসান বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। তবে আনন্দের উপলক্ষ্যটা তৈরি করেন উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম। শরিফুলের অফ-স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে মুশফিকের চোখ ধাঁধানো ক্যাচে আউট হন   ৪ রান করা ওপেনার কুশল পেরেরা।
শুরুতে উইকেট হারালেও ভড়কে যাননি আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। পাল্টা আক্রমনে বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে থাকেন তারা। জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে উইকেটে জমে যান  নিশাঙ্কা ও মেন্ডিস। এ অবস্থায় ১১তম ওভারে প্রথমবারের আক্রমনে এসেই উইকেট তুলে নেন তানজিম সাকিব। ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে শরিফুলের দারুন ক্যাচে আউট হন ১টি করে চার-ছক্কায় ১৯ রান করা মেন্ডিস। দ্বিতীয় উইকেটে নিশাঙÍা-মেন্ডিস  ৬৩ বলে ৬১ রান যোগ করেন।
মেন্ডিস ফেরার পরের ওভারে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন নিশাঙ্কাও। ৮টি চারে ৪১ রান করা নিশাঙ্কাকে বোল্ড করেন মুস্তাফিজুর রহমানের পরিবর্তে এবারের বিশ^কাপে প্রথম খেলতে নেমে পেসার তানজিম সাকিব।
৭২ রানে ৩ উইকেট পতনের পর দলের হাল ধরেন সাদিরা সামারাবিক্রমা ও চারিথ আসালঙ্কা। বাংলাদেশের বোলারদের দেখেশুনে খেলে শ্রীলংকার রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন তারা। ইনিংসে দ্বিতীয়বারের মত হাফ-সেঞ্চুরির জুটিতে উইকেটে সেট হয়ে যান সামারাবিক্রমা ও আসালঙ্কা। এই জুটি ভাঙ্গতে ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে বোলারদের ব্যবহার করেও  বাংলাদেশ যখন সাফল্য পাচ্ছিলো না তখনই  আবারও তানজিম সাকিবের হাত ধরে ব্রেক-থ্রু পায় টাইগাররা।
সাকিবের করা ২৫তম ওভারের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে মাহমুদুল্লাহকে ক্যাচ দিয়ে থামেন ৪২ বলে ৪টি চারে ৪১ রান করা সামারাবিক্রমা। আসালঙ্কার সাথে ৬৯ বলে ৬৩ রান যোগ করেছিলেন তিনি।
সামারাবিক্রমার বিদায়ে উইকেটে আসেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। কিন্তু কোন বল না খেলেই বিশে^র প্রথম ব্যাটার হিসেবে টাইম আউট হন তিনি। ক্রিজে গিয়ে হেলমেট ঠিক করতে গিয়ে, সেটির ফিতা ছিড়ে যায়। এরপর নতুন হেলমেটের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন ম্যাথুজ। এরমধ্যে নতুন হেলমেট আনলেও, সেটিও ফিরিয়ে দেন তিনি। এরমধ্যে ৩ মিনিটের বেশি সময় অতিবাহিত হলে ম্যাথুজের বিপক্ষে টাইম আউটের আবেদন করে বাংলাদেশ। তাতে সাড়া দেন অন-ফিল্ড আম্পায়ার দক্ষিণ আফ্রিকার মারাইস এরাসমাস। বিশ^কাপের প্লেয়িং কন্ডিশনে, কোন ব্যাটার আউটের পর নতুন বাটারের ২ মিনিটের মধ্যে বল মোকাবেলা করতে হবে।  সেটা করতে ব্যর্থ হওয়ায়  ফিরে যেতে হয় ম্যাথুজকে।
দলীয় ১৩৫ রানে পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে ম্যাথুজ ফেরার পর ক্রিজে আসালঙ্কার সঙ্গী হন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। দলকে লড়াইয়ে ফেরাতে দেখেশুনে খেলতে থাকেন তারা। এই জুটিতে ওয়ানডেতে ১১তম হাফ-সেঞ্চুরি করেন আসালঙ্কা। ৩৭তম ওভারে শ্রীলংকার রান ২শ স্পর্শ করে। পরের ওভারে মিরাজের বলে স্টাম্পড আউট হন ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৬ বলে ৩৪ রান করা ডি সিলভা। ষষ্ঠ উইকেটে ৮২ বলে ৭৮ রান যোগ করে দলের রান ২১৩তে নেন ডি সিলভা- ধনাঞ্জয়া।
এরপর মহেশ থিকশানার সাথে ৪৮ বলে ৪৫ রান তুলে দলের রান আড়াইশ পার করেন আসালঙ্কা। থিকশানা ২২ রানে থামলেও ৪৮তম ওভারে ওয়ানডেতে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ১০১ বল খেলা আসালঙ্কা।
সেঞ্চুরির পূর্ন করার পর  ৪৯তম ওভারে তানজিমের বলে লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে  ৬টি চার ও ৫টি ছক্কায় ১০৫ বলে ১০৮ রান করেন আসালঙ্কা।
অষ্টম ব্যাটার হিসেবে আসালঙ্কা ফেরার পর ৩ বল বাকী থাকতে ২৭৯ রানে অলআউট হয় শ্রীলংকা। বাংলাদেশের তানজিম সাকিব  ১০ ওভারে ৮০ রানে ৩ উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট নেন শরিফুল ও সাকিব এবং ১ উইকেট নেন মিরাজ।
নিজেদের ইনংসে শ্রীলংকান ব্যাটারা  ৭টি ছক্কা হাকান। এতে বিশ^কাপ ইতিহাসে এক আসরে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড হয়। ২০১৫ আসরের  সর্বোচ্চ ৪৬৩ ছক্কাকে টপকে গেছে এবারের বিশ^কাপ।

CATEGORIES
Share This

COMMENTS