মঙ্গলবার, ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঢাকা মেডিকেল কলেজ, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোকে আরো উন্নত করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা মেডিকেল কলেজ, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোকে আরো উন্নত করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

পজিটিভ বিডি ২৪ডট নিউজ (ঢাকা): প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামীতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পাশাপাশি প্রতিটি জেলা উপজেলা হাসপাতালকে আরো আধুনিক উন্নত  করা হবে
তিনি বলেন, “আমরা যদি ভবিষ্যতে জাতির সেবা করার আর একটি সুযোগ পাই, ইনশাআল্লাহ, আমরা স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ডিএমসিএইচ) এবং প্রতিটি জেলা উপজেলা হাসপাতালের আরও উন্নয়ন করব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি স্বাস্থ্য পরিকার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন দেশের প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেকমিউনিটি আই সেন্টার স্থাপনকার্যক্রমের ৪র্থ পর্যায়ে ৬৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপিতকমিউনিটি আই সেন্টারউদ্বোধনকালে দেয়া ভাষণে একথা বলেন।
তিনি একই অনুষ্ঠানে পানি সম্পদ মণন্ত্রণালয়ের ৮০টি উন্নয়ন প্রকল্প পুন:খননকৃত ৪৩০টি ছোট নদীখালজলায়ের উদ্বোধন এবং নতুন অনুমোদিত ২০টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটিকে থেকে হাজার শয্যার একটি আধুনিক হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তুলবো।
তিনি বলেন, কোভিড১৯ না এলে এবারই তাঁর সরকার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আধুনিকায়নের কাজ সম্পন্ন করে ফেলতো।
প্রধানমন্ত্রী কোভিডের ভ্যাকসিন আগে আনার জন্য, গবেষণার জন্য ১২শকোটি টাকা অগ্রিম প্রদান, অনেক উন্নত দেশ না পারলেও বিনামূল্যে দেশের মানুষকে কোভিড ভ্যাকসিন প্রদান, টিকা সংরক্ষণে উন্নত শীতাতপ নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা করা, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদান, তাদের জন্য আলাদা ভাতা প্রদান, পৃথক আবাসন ব্যবস্থা করা, তাদের নিরাপত্তার জন্য কোভিড প্রতিরোধী সুরক্ষা স্যুট আমদানী, টিকা প্রদান প্রক্রিয়ার ব্যয় এবং জনগণকে বাঁচাতে তাঁর সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের খতিয়ান তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমদানীরপ্তানি বন্ধ থাকায় এবং রিজার্ভে টাকা জমা পড়ায় আমরা দুহাতে টাকা খরচ করে মানুষকে বাঁচিয়েছি।
তিনি বলেন, এসব খাতে অনেক টাকা খরচ হয়ে যাওয়ায় অনেক কাজ আমরা শুরু করতে পারিনি। ইনশাল্লাহ, আগামীতে সুযোগ পেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে যেমন উন্নত করবো তেমনি প্রত্যেকটি জেলা উপজেলার  হাসপাতালগুলোকে আমরা আরো উন্নত করবো।
সারাদেশে ডাক্তারনার্সদের আবাসনে সরকার উন্নত বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ শুরু করেছে, ভবিষ্যতে আরো করে দেয়া হবে। আগামীতে সুযোগ পেলে চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনরকম অবহেলা যেন না হয়, সে ব্যবস্থা তাঁর সরকার করে দেবে।
কমিউনিটি আই সেন্টার স্থাপনকার্যক্রমের ৪র্থ পর্যায়ে এদিন ৬৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপিতকমিউনিটি আই সেন্টারউদ্বোধন সহ দেশে এখন ২শটিকমিউনিটি আই সেন্টার স্থাপনকরা হয়েছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, এরফলে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠী এখন চক্ষুসেবা পাচ্ছে। পর্যন্ত ২০ লাখ জনগণ এর সেবা গ্রহণ করেছে। ফলে অকাল অন্ধত্ব থেকে অনকেইে মুক্তি পেয়েছে, অনেক দরিদ্র রোগীকে বিনামূল্যে চশমা সরবরাহ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সকল কমিউনিটি ক্লিনিকে এই সেবার ব্যবস্থা করা হবে

যশোরের শার্শা উপজেলা, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা এবং মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার সংশ্লিষ্টরা ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী গত ১৫ বছরে বাস্তবায়িত উন্নয়ন পরিকল্পনা সমন্বিতজয়যাত্রানামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের ওপর দুটি পৃথক ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
বিএনপি চিন্তার দৈন্যতা স্বার্থপরতার  উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ কমিউনিটি ক্লিনিক করেছে। এগুলোতে যারা চিকিৎসা নেবে তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে পারে সে আতংকে খালেদা জিয়া ২০০১ পরবর্তি সময় ক্ষমতায় এসে জনস্বার্থের কথা চিন্তা না করে৯৬ পরবর্তি সময়ে তাঁর সরকার প্রতিষ্ঠিত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল। এখন সারাদেশে হাজারের অধিক কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং সেখান থেকে ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদানসহ নানা স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এসব কমিউনিটি ক্লিনিক যাতে আর কেউ বন্ধ করতে না পারে সেজন্য ট্রাস্ট ফান্ড করে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে কোন মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় ছিলনা। বিএসএমএমইউ প্রতিষ্ঠা করার সময় বিএনপি ডাক্তারদের অনেক বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু দেশে এখন ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম সিলেট সহ মোট ৫টি মেডিকেল বিশ^দ্যিালয় রয়েছে। আমাদের লক্ষ্য প্রত্যেক বিভাগেই একটি মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় করে দেব। কারণ আমাদের ডাক্তার, নার্স দক্ষ জনশক্তির পাশাপাশি চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণারও প্রয়োজন। সেজন্য আলাদা ফান্ডও দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ’৯৬ থেকে পর্যন্ত তাঁর সরকার বেশকিছু বিশেষায়িত ইনষ্টিটিউট হাসপাতাল গড়ে তুলেছে যার ফলে কর্মসংস্থান যেমন বেড়েছে তেমনি মানুষ সেবা চিকিৎসা পাচ্ছে,
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি রাস্তাঘাট, ব্রীজ, নৌ পথ, রেলপথ, আকাশপথ সহ বিভিন্ন খাতে ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে তার জন্য আমি জনগণের প্রতি, বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। কারণ তারাই বারবার ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসীন করেছে।
তিনি বলেন, “নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই আপনারা এদেশে স্বাধীনতা পেয়েছেন এবং নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছিলেন বলেই আজকে এই উন্নয়নটা সম্ভব হয়েছে।
দারিদ্রের হার ৪১ ভাগ থেকে ১৮ দশমিক ভাগে এবং হত দরিদ্রের হার ২৫ দশমিক ভাগ থেকে দশমিক ভাগে নামিয়ে এনেছে তাঁর সরকার’, সেকথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইনশাল্লাহ আগামীতে এদেশে কেউ আর হত দরিদ্র বা ভূমিহীনগৃহহীন থাকবে না। সকল শ্রেণী পেশার মানুষের জন্য ঘর করে দেওয়ার পাশাপাশি জীবন মানের উন্নয়নের ব্যবস্থা সরকার করেছে।
তিনি তাঁর সরকারের প্রয়াসে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সুপেয় পানির সুবিধা পৌঁছে দেয়ার উল্লেখ করে এগুলো ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন এবং তাঁর সরকারের করে দেয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান। তিনি সকল শ্রেণীর জনপ্রতিনিধিদের বিষয়ে নজরদারি করার আহবান জানান

 

CATEGORIES
Share This

COMMENTS