রবিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জুলাইয়ে কিছু ক্ষেত্রে বিক্ষোভকারীদের খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয় : জাতিসংঘ

জুলাইয়ে কিছু ক্ষেত্রে বিক্ষোভকারীদের খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয় : জাতিসংঘ

পজিটিভ বিডি নিউজ ২৪ডট কম  (ঢাকা): জুলাই মাসে বিক্ষোভকালে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য আওয়ামী লীগের কর্মীরা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল সময় কিছু ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের খুব কাছে থেকে গুলি করে হত্যা করে

জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে কথা বলা হয়েছে

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার (ওএইচসিএইচআর) কার্যালয়ের সাম্প্রতিক তথ্যঅনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘…রোম সংবিধির নং অনুচ্ছেদ  অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী আওয়ামী লীগের সমর্থকরা যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেতা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

এতে আরও বলা হয়, কিছু ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের হত্যা করার উদ্দেশ্যেই খুব কাছে থেকে তাদের গুলি করে

ওএইচসিএইচআরএর অফিস গত ১২ ফেব্রুয়ারি জেনেভা কার্যালয় থেকে২০২৪ সালের জুলাই আগস্টের বিক্ষোভের সাথে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন নির্যাতনশীর্ষক তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে যে, অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে, নিরাপত্তা বাহিনী সামরিক রাইফেল স্বয়ংক্রিয় পিস্তল থেকে জনতার ওপর প্রাণঘাতি গুলি চালিয়েছে। সময় বিক্ষোভকারীদের মাথা শরীর লক্ষ্য করে গুলি করা হয়

নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের শরীরের সব গুরুত্বপূর্ণ জায়গা লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে শটগানের গুলি  ছোঁড়ে। সাধারণত একাধিক বন্দুকধারী কয়েক রাউন্ড করে গুলি ছুঁড়ে

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘যারা হামলা চালাতেন তারা  তাদের কমান্ডাররা লক্ষ্যবস্তুতে থাকা জনতার কিছুসংখ্যক যেন মারা যায়, সে ব্যাপারে বিশেষ লক্ষ্য রাখতেন।

এতে আরও বলা হয়, ‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, ধরনের হত্যাকাণ্ড আত্মরক্ষা বা অন্যদের প্রতিরক্ষা হিসেবে দেখানোর কোনো যুক্তি নেই। কারণ হতাহতরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছিলেন। তারা সম্পত্তি ভাঙচুর করছিলেন না বা দাঙ্গাকারীও ছিলেন না। তারা কোন হুমকিও ছিলেন না।

ওএইচসিএইচআর জানায়, জুলাই মাসের বিক্ষোভের সময় বাংলাদেশে বিক্ষোভকারীদের অন্যান্য বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ব্যাপক পদ্ধতিগত আক্রমণের অংশ হিসেবে হত্যা, নির্যাতন, কারারুদ্ধতা অন্যান্য অমানবিক কর্মকাণ্ডের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে বিশ্বাস করার মতো যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম সংবিধির অনুচ্ছেদ () অনুযায়ী, একটি বেসামরিক জনসংখ্যার বিরুদ্ধে পরিচালিত ব্যাপক বা পদ্ধতিগত আক্রমণই মানবতাবিরোধী অপরাধ।

এতে আরও বলা হয়, ‘যে কোনো বেসামরিক জনগণের ওপর পরিচালিত আক্রমণবলতে এমন একটি আচরণের ধারা বোঝায়, যা একাধিক হত্যা, নির্যাতন বা অন্যান্য কর্মকাণ্ড যখন তা রাষ্ট্র বা সাংগঠনিক নীতি অনুসরণ করে ধরণের আক্রমণের জন্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয় এবং এটি রোম সংবিধির ধারা এর আওতায় নিষিদ্ধ

ওএইচসিএইচআর জানায়, ১৫ জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনের সময় নির্দিষ্ট কিছু বেসামরিক নাগরিক, বিশেষ করে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যা, নির্যাতন, কারাদণ্ড অন্যান্য অমানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছিল যা রোম সংবিধির ধারা এর আওতায় পড়ে।

এতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকালে নিরাপত্তা বাহিনী গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সদস্যরা তাদের হেফাজতে বা নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যক্তিদের ওপরও নির্যাতন চালিয়েছে

ওএইচসিএইচআর দাবি করে বলেছে, বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক পদ্ধতিগত আক্রমণটি একটি সরকারি নীতি অনুসরণ করে পরিচালিত হয়েছিল বলে তাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে

রাজনৈতিক নেতৃত্ব ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বিক্ষোভকে সহিংস বেআইনিভাবে দমন করার এবং ক্ষমতায় থাকার উদ্দেশ্য আক্রমণটি সংগঠিত করেন নির্দেশনা দেন

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গোয়েন্দা নিরাপত্তা পরিষেবা এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বও সেই নীতি অনুসরণে সংঘটিত অপরাধ গোপন করার জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা চালায়, ইচ্ছাকৃতভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়, অন্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে এবং মিডিয়া, ভুক্তভোগী, ভুক্তভোগীর পরিবার আইনজীবীদের ভয় দেখায়।

৫৮ Views
CATEGORIES
Share This

COMMENTS