রবিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য বিশ্বব্যাংক, আইএফসি, আইএমএফের সহায়তা চায় সরকার : অর্থ উপদেষ্টা

সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য বিশ্বব্যাংক, আইএফসি, আইএমএফের সহায়তা চায় সরকার : অর্থ উপদেষ্টা

পজিটিভ বিডি নিউজ ২৪ডট কম  (ঢাকা): অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সরকার দেশে চলমান ও ভবিষ্যৎ কর্মসূচি ও পরিকল্পনার জন্য ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) ও আইএমএফের মতো উন্নয়ন সহযোগীদের পাশাপাশি বিশ্বব্যাংকের কাছে সহায়তা চেয়েছে।
আজ সচিবালয়ে অর্থ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে বিশ্বব্যাংক ও ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (আইএফসি) একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন উপদেষ্টা।
সরকার ঋণদাতা সংস্থাগুলোর কাছে কী ধরনের সহায়তা চেয়েছে জানতে চাইলে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, আামরা তাদের কিছু চলমান ও ভবিষ্যতের কর্মসূচিতে সহায়তা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে তাদেরকে আমাদের প্রয়োজন সম্পর্কে পরে জানাব এবং তাদের সাথে আরও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, সরকার ব্যাংকিং খাতের সংস্কার, বিদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনা এবং কর ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তার পাশাপাশি শুধু আইএফসি ও আইএমএফ নয়, অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকেও সহায়তা চেয়েছে। অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সমন্বয় সাধনের পর সরকার সুনির্দিষ্ট সহায়তা পাওয়ার জন্য আইএফসি ও আইএমএফের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।
তিনি আরো যোগ করেন, সহায়তার জন্য আইএমএফকে অনুরোধ করা হলেও পুনরাবৃত্তি এড়াতে অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গেও সমন্বয় করছে সরকার। বিভিন্ন অংশীদারের কাছ থেকে যেসব সহায়তা আমরা চাই, তাতে কোনো ওভারল্যাপ যেন না ঘটে তা আমরা নিশ্চিত করব।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অর্থনৈতিক ফ্রন্ট ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য সরকারের সম্পদ প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমরা যতটা সম্ভব স্থানীয় সম্পদ সংগ্রহ করব। তবে কিছু ক্ষেত্রে আমাদের আইএমএফের মতো বাহ্যিক উৎস থেকে অর্থায়ন প্রয়োজন, যা পেমেন্ট সহায়তার ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি রাজস্ব ও ব্যাংকিং খাতের সংস্কারে সহায়তা করবে।
বিশ্বব্যাংক ও আইএফসি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আজকের বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্ন খাতে সম্ভাব্য সহায়তার বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বিস্তৃত অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য এবং নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আমরা তাদেরকে বলেছি, আমরা ব্যাংকিং, রাজস্ব ও অন্যান্য খাতে সংস্কার করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি যা বাস্তবায়নে কিছু সময় লাগবে।
উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বব্যাংকের দলটি বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার বাজার ইস্যু, ব্যাংকিং খাতের সংস্কার এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে বিশেষভাবে কথা বলবে। তারা এনবিআরের সঙ্গেও সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা করবেন।
উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, আগামী অক্টোবরে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক গ্রুপের আসন্ন বার্ষিক সভায় ঋণদাতা সংস্থাগুলোর নীতিনির্ধারকদের সঙ্গেও আলোচনা করবেন তারা।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার, দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ইমদাদ ফাখৌরি, বিশ্বব্যাংকের আবাসিক পরিচালক আবদৌলায়ে সেক এবং বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অপারেশন ম্যানেজার গেইল মার্টিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট অজয় বঙ্গ সম্প্র্রতি ঘোষণা দিয়েছেন, বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগে সহায়তা করতে বিশ্বব্যাংক ৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে। এর মধ্যে ২ বিলিয়ন ডলার নতুন ঋণ এবং ১.৫ বিলিয়ন ডলার বিদ্যমান কর্মসূচি থেকে পুনঃনির্ধারণ করা হবে।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) সাইডলাইনে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট এই সহায়তার ঘোষণা দেন।

 

২০৬ Views
CATEGORIES
Share This

COMMENTS