
বিরামপুরে কয়েক দপ্তরের সরকারী সুবিধাভোগীদের টাকা খোয়া গেছে হ্যাকারদের দৌরাত্বে ; “গোপন নাম্বার গোপন রাখার অঙ্গিকার” করার তাগিদ !

মোরশেদ মানিক : বিরামপুর কয়েক দপ্তরের সরকারী সুবিধাভোগীদের টাকা খোয়া গেছে হ্যাকারদের দৌরাত্বে। তাদের ফোনকলটি বাংলাদেশের সেবাদানকারী কোন মোবাইল সিম নাম্বারে অস্থিত্ব না থাকায়, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে মোবাইল করায় নাম্বার শনাক্ত করা যাচ্ছে না। বিষয়টি নিশ্চিত করে বিরামপুর থানার ওসি (তদন্ত) আতাউর রহমান বলেন, প্রতারক হ্যাকাররা অবৈধ্য ভিপিএন এর মাধ্যমে সরকারী উপকারভোগীদের টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য কল করে থাকে। প্রতারক চক্র পুলিশ বাহিনীতেও পদায়ন ও বদলীর আশ্বাস দিয়ে উধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে টাকা দাবী করে থাকে, কিন্তু মোবাইল কলগুলো ভিপিএন থেকে করায় তাদের নাম্বারটি কোন মোবাইল সীমের সাথে মিল নেই। তিনি ১১ ডিজিট ছাড়া কোন নাম্বার থেকে কল আসলে, লোভের বশবতী হয়ে প্রতারক চক্রকে টাকা উত্তোলনের গোপন নাম্বার না দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সকল দপ্তর তাদের সেবাদানকারীদের কাছ থেকে কখনোই টাকা তোলার জন্য গোপন নাম্বার চাইবে না, বিষয়টি সকলকে স্মরনে রাখতে হবে।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনীম আওন বলেন, ইদানিং হ্যাকারদের দৌরাত্ব বেড়েই চলেছে। কয়েকটি দপ্তরের উপকারভোগীদের মধ্যে কয়েকজন সহজ সরল গোপন নাম্বার দেওয়ায় হ্যাকারা টাকা নিয়ে নিচ্ছে, এমন অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। তিনি উপকারভোগীদের ভুয়া সরকারী কর্মকর্তার পরিচয়ে মুঠোফোনে চাইলেও টাকা উত্তোলনের গোপন নাম্বার না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বিষয়টির প্রতি সর্তকা বাড়াতে মসজিদ, মন্দির, গিজ্জায় সকল ধর্মের মানুষকে অবহিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। ইউএনও নুজহাত তাসনীম আওন আরও বলেন এ বিষয়ে জনসচেতনা বাড়াতে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও সকল এনজিও’র প্রতিনিধিদের প্রতি নিজ নিজ অবস্থান থেকে আন্তরিক সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুল আউয়াল জানান, তার দপ্তরের ভাতাভোগীদের টাকা তুলে নিতে হ্যাকাররা অব্যাহতভাবে তাদের কল করে সরকারী কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে টাকা উত্তোলনের গোপন নাম্বার চাচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকজন সরল বিশ্বাসে গোপন পিন নাম্বার বলে দেয়ায় নিমিশেই টাকা তুলে নিয়েছে হ্যাকাররা। তিনি ভাতাভোগীদের সর্তক করে দিয়ে বলেছেন, সমাজসেবা দপ্তর কখনো উপকারভোগীর গোপনীয় পিনকোড চাইবে না। তিনি প্রতারক হ্যাকারদের ফাদে পড়ে সরকারী ভাতা উত্তোলনের গোপন নাম্বার না দেওয়ার জন্য সকল ভাতাভোগীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোশাররত জাহান বলেন, তার দপ্তরে উপকারভোগীদের মধ্যে কয়েকজনের সরলার সুযোগ নিয়ে হ্যাকাররা টাকা তুলে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। তিনি মুঠোফোনে যতবড় অফিসারের পরিচয় দিয়ে সরকারী টাকা উত্তোলনের গোপন নাম্বার চাক না কেন, তাদের ফাদে যেন না পরেন- এ বিষয়ে সর্তক থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুনা লায়লা বলেন, তার দপ্তরে শিক্ষা সহায়তা প্রাপ্ত উপকারভোগীদের মধ্যে কয়েকজন বোকামী করে গোপন নাম্বার বলে দেয়ায় টাকা টাকা তুলে নিয়েছে হ্যাকাররা। গোপন নাম্বার গোপন রাখার অঙ্গিকার করলেই প্রতারকরা আর সুযোগ পাবে না , তিনি প্রত্যাশা করেন।
হ্যাকাররা বিদ্যালয়ে যন্ত্রপাতি দেয়ার আশ্বাসে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে টাকা দাবী করছে, জানিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তা শমসের আলী ও আব্দুস সালাম।
সব মিলায়ে ভিপিএনর কারসাজি রোধে সকলে ঐক্যকত পোষন করেন “গোপন নাম্বার গোপন রাখার অঙ্গিকার” করতে হবে , তাহলে হ্যাকারদের অপতৎপরতা রোধকরা যাবে। এ সংকট সারাদেশে, রুখতে হবে ঐক্যমতে।
৭৬ Views