বুধবার, ১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জেনোসাইডের সংজ্ঞা নিয়ে চিফ প্রসিকিউটরের বক্তব্য ভুলভাবে প্রচার শনাক্ত: বাংলাফ্যাক্ট

জেনোসাইডের সংজ্ঞা নিয়ে চিফ প্রসিকিউটরের বক্তব্য ভুলভাবে প্রচার শনাক্ত: বাংলাফ্যাক্ট

পজিটিভ বিডি নিউজ ২৪ডট কম  (ঢাকা): জেনোসাইডের সংজ্ঞা নিয়ে চিফ প্রসিকিউটরের বক্তব্য ভুলভাবে প্রচার শনাক্ত করেছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এর ফ্যাক্ট চেক মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট

বাংলাফ্যাক্টের অনুসন্ধানে শনাক্ত হয় যে, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের বরাত দিয়েজুলাইআগস্টে বাংলাদেশে কোনো গণহত্যা হয়নি : চিফ প্রসিকিউটরশিরোনামে খবর প্রকাশ হয়েছে, যা পাঠককে ভুল বার্তা দিতে পারে। মূলত তিনি জুলাইয়ের ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে প্রচলিত ভাষায় গণহত্যা বললেও আন্তর্জাতিক আইনের পরিভাষায় মাস কিলিং এবং জেনোসাইডের যে পার্থক্য আছে, সেটি স্পষ্ট করেন। তার এই বক্তব্যকেই ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে এসব শিরোনামে

বাংলাফ্যাক্ট জানায়, গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিকের প্রশ্ন করেন, অভিযোগ হিসেবেগণহত্যাআছে কিনা। এর জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রচলিত ভাষায় যদি একসঙ্গে বেশি মানুষ মারা যায় তাহলে আমরা বলি যে গণহত্যা হয়েছে। একসঙ্গে অনেক মানুষ মারা গেছে এটাকে মাস কিলিং অথবা ম্যাসাকার বলতে পারেন, কিন্তু আইনের যেটা জেনোসাইডসেইটা কিন্তু এটা না।

চিফ প্রসিকিউটর আরো ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘ধরেন একশ জন লোককে মেরে ফেলা হলো। এটা বাংলাদেশেরআমরা বাংলা ভাষায় বলি গণহত্যা করেছে। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল আইনের জেনোসাইড এটা নয়। সুতরাং আমরা যদি আমাদের স্বাভাবিক পরিভাষায় গণহত্যা বলিও, সেটা বলতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু আইনে অপরাধ হিসেবে জেনোসাইড যে জিনিসটা সংজ্ঞায়িত আছে, সেটা হওয়ার জন্য সার্টেন ক্রাইটেরিয়া ফুলফিল করতে হয়।চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘বাংলাদেশে মাসকিলিং হয়েছে, ব্যাপক ভিত্তিক হত্যাকাণ্ড হয়েছে, দেড় হাজার এর উপরে মানুষকে মারা হয়েছে, এইটা ম্যাসাকার, এটা ব্যাপক হারে হত্যা, মার্ডার। কিন্তু ইট ইজ নট জেনোসাইড। এটা হচ্ছে প্রস্তাব। আইনের জেনোসাইড এবং মাসকিলিং এক জিনিস নয়।

জেনোসাইড মাসকিলিংদুটোর বাংলা পরিভাষা হিসেবেগণহত্যাশব্দের ব্যবহার করার চল থাকার কারণে আইনি অবস্থান থেকে অনেকেই বিভ্রান্তের মধ্যে পড়েন। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ীজেনোসাইডবা এই অর্থেগণহত্যাবলতে কিছু নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে (রেসিয়াল, ন্যাশনাল, রিলিজিয়াস, এথনিক) আংশিক বা সম্পূর্ণ ধ্বংসের নিয়তে (ইন্টেন্ট) পরিকল্পিত কিছু অপরাধমূলক কাজকে বোঝানো হয়। জেনোসাইড অর্থে গণহত্যা বর্গে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আক্রান্ত (টারগেটেড) গোষ্ঠীকে উপর্যুক্ত নির্দিষ্ট চারটি গোষ্ঠী পরিচয়ের আওতায় পড়তে হবে এবং সেই নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে আংশিক বা পুরোপুরি ধ্বংস করার নিয়ত (ইন্টেন্ট) এর উপস্থিতি থাকতে হবে

উল্লেখ্য, আইনে নির্দিষ্ট বর্গের মধ্যেরাজনৈতিকগোষ্ঠী নেই। ফলে, রাজনৈতিক কোনো দল বা গোষ্ঠীকে ধ্বংসের নিয়তে চালানো নিধনযজ্ঞ আন্তর্জাতিক আইনে জেনোসাইডের সংজ্ঞায় পড়ে না। তবে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এটা মানবতাবিরোধী অপরাধ বা ক্রাইমস অ্যাগেইনস্ট হিউম্যানিটি। শব্দের বিভ্রান্তি এড়ানোর জন্য বাংলাদেশের অনেক গবেষক জেনোসাইড এর বাংলা হিসাবেগণহত্যানা বলেজেনোসাইড বলার পক্ষে মত দেন

বাংলাদেশে চলমান গুজব এবং ভুয়া খবর, অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ায় দায়িত্ব পালন করছে বাংলাফ্যাক্ট

সম্প্রতি ভারত থেকে পরিচালিত বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান। তাছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও গুজব এবং ভুয়া খবর প্রচার শনাক্ত করা হচ্ছে

Views
CATEGORIES
Share This

COMMENTS