প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ১০:১৮ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ এপ্রিল ১৮, ২০২৫, ১:১৪ অপরাহ্ণ
সুন্দরবনের উপকূলীয় বাগেরহাটে লবণাক্ত পতিত জমিতে চাষ হচ্ছে লাউ

এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি : বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের উপকূলীয় শস্যভাণ্ডার নামে খ্যাত উর্বর ভূমি বাগেরহাটের ৯ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাছের ঘেরের বাঁধে লবণাক্ত পতিত জমিতেচাষ হচ্ছে লাউ।জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বাগেরহাটের উপকূলের জনজীবন। ক্রমাগত ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, লবণাক্ততার প্রসার এবং জলাবদ্ধতার কারণে এ অঞ্চলে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে এ অঞ্চলে লবণসহিষ্ণু ফসল আবাদ করছেন কৃষক। এ তালিকায় এবার যুক্ত হয়েছে বারি-৪ জাতের লাউ। হেক্টরপ্রতি এ জাতের ৫৫-৬০ টন পর্যন্ত উৎপাদন হয় বলে জানিয়েছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। তাছাড়া বারি-৪ লাউ যেমন লবণসহিষ্ণু তেমনি দ্রুতবর্ধনশীল।
সরেজমিনে ও কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে,মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জমিতে বারি-৪ জাতের লাউ চাষ করেছেন। কৃষক মো: মোয়াজ্জেল হোসেন দুই বিঘা জমিতে বারি-৪ জাতের লাউ চাষ করেছেন। সাড়ে তিন মাসের ব্যবধানে লাউ ধরেছে গাছে। একেকটি লাউ গড়ে চার-পাঁচ কেজি পর্যন্ত ওজন। ৬০ হাজার টাকার লাউ বিক্রিও করেছেন। এখনো গাছে যে পরিমাণ লাউ রয়েছে, আরো অন্তত ৮০-৯০ হাজার টাকা বিক্রি হতে পারে বলে জানান তিনি।বাগেরহাট রিপোর্টার্স ইউনিটি সভাপতি এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির জানান, সূর্যমূখী চাষিদের কে সার, বীজ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন সময় সহযোগিতা করে কৃষি বিভাগ। বিভিন্ন সীড কোম্পানি পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে সার ও বীজ দিয়ে গরীব কৃষকদের সহযোগিতা করতে হবে।
এ বিষয় উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো: সাইফুল ইসলাম বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে ঘেরের বাঁধে অন্যান্য সবজির পাশাপাশি বারি-৪ জাতের লাউ চাষ করেছেন। মাত্র তিন মাসে মধ্যে প্রতিটি গাছেই লাউ ধরেছে। ব্যাপারীরা তার কাছ থেকে লাউ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। লাউ চাষে খরচ অনেক কম। বীজ বপন করার পর চারা গজালে মাঝে মধ্যে সেচ ও কিছু জৈব সার প্রয়োগ করলেই হয়। প্রতি বিঘায় সর্বোচ্চ ১৬ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে তার।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, শীত ও গ্রীষ্ম উভয় মৌসুমে জেলায় প্রচুর পরিমাণ সবজি উৎপাদন হয়, যা স্থানীয় মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করো হয়। বারি-৪ জাতের লাউ চাষে সম্ভাবনাময় বাগেরহাটের ৯ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাগেরহাটের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত)মো: আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের মাটি বারি-৪ জাতের চাষের জন্য উপযোগী। এটি যেমন লবণ সহ্য করতে পারে, তেমনি ফলনও বেশি হয়। একেকটি লাউ ছয়-সাত কেজি পর্যন্ত হয়, যা হেক্টরপ্রতি ৫৫-৬০ টন উৎপাদন হয়। অন্য যেকোনো সবজির তুলনায় এটি বেশ লাভজনক। বাগেরহাট অঞ্চলে মাছের ঘেরের বাঁধে ও বসতবাড়ির আঙিনায় এটি চাষ করা যায়। কৃষকদের মাঝে বীজ সরবরাহ করতে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রদর্শনী মাঠে প্রায় দুই বিঘা জমিতে এ জাতের লাউ চাষ করা হয়েছে, যার পুরোটাই বীজ তৈরি করা হবে।#
Copyright © 2025 পজিটিভ বিডি নিউজ ২৪. All rights reserved.