প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ৯:৫৮ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ এপ্রিল ৯, ২০২৫, ১:৫৪ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশকে শুল্ক কাঠামো সংস্কার করতে হবে: এডিবি

পজিটিভ বিডি নিউজ ২৪ডট কম (ঢাকা): এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিওং বুধবার বলেছেন, মার্কিন পাল্টা শুল্কের প্রভাব মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশকে মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী দৃষ্টিকোণ থেকে পণ্য এবং বাজারকে বৈচিত্র্যময় করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘সম্ভাব্য পতন ঠেকানোর সম্ভাব্য উপায় আছে। হ্যাঁ বাংলাদেশের উচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শুল্কের বিষয়টি সক্রিয়ভাবে আলোচনার জন্য বিবেচনা করা, যদিও এটি ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।’
রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ আবাসিক মিশন কার্যালয়ে এডিবি’র সর্বশেষ প্রতিবেদন, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও), এপ্রিল, ২০২৫-এর বাংলাদেশ অধ্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কান্ট্রি ডিরেক্টর এ কথা বলেন।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ‘পাল্টা শুল্ক’ নীতির অংশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ থেকে আমদানির ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।
হোয়াইট হাউস কর্তৃক প্রকাশিত একটি চার্ট অনুসারে, মার্কিন সরকার দাবি করেছে, বাংলাদেশ কার্যকরভাবে আমেরিকান পণ্যের ওপর ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন বাজারে প্রবেশকারী বাংলাদেশি পণ্যের ওপর এখন ৩৭ শতাংশ ‘ছাড়প্রাপ্ত পাল্টা শুল্ক’ আরোপ করা হবে।
এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইতোমধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের উপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন।
চিঠিতে অধ্যাপক ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বাংলাদেশের ওপর মার্কিন পাল্টা শুল্ক ব্যবস্থার প্রয়োগ তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখার অনুরোধ করেছেন যাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে মার্কিন রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধির উদ্যোগটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে।
এছাড়াও, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন ইউএসটিআর-কে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। যেখানে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সরকার শূন্য শুল্কে বাংলাদেশে আরো ১০০টি পণ্য রপ্তানির সুবিধা দেবে।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি একটি স্বল্পমেয়াদী ব্যবস্থাও তবে আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বাংলাদেশকে রপ্তানির জন্য তার বাজার এবং পণ্যগুলোকে বৈচিত্র্যময় করতে হবে।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ তার নিজস্ব আমদানি শুল্ক কাঠামোকে যুক্তিসঙ্গত করার এবং শুল্ক ব্যবস্থা বিবেচনা করে শূন্য শুল্ক বাধাগুলো সংস্কার করার সুযোগ নিতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এই ধরনের শুল্ক সংস্কার কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই নয় অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।’
এডিবি কান্ট্রি ডিরেক্টর আরো বলেন, ‘সুতরাং, মার্কিন শুল্কের সম্ভাব্য প্রশমন হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের এই বিস্তৃত পদক্ষেপগুলো বিবেচনা করা উচিত।’
জিয়ং আরো উল্লেখ করেছেন, মার্কিন শুল্কের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কতটা প্রভাব পড়বে সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য এখনই দেওয়া এখনো সম্ভব নয়।
কান্ট্রি ডিরেক্টও বলেন, ‘আমরা প্রভাবের ওপর বিশ্লেষণাত্মক কাজ চালিয়ে যাব এবং জুলাই মাসে আরো এডিও হালনাগাদ করা হবে।’
বাংলাদেশ একাধিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে স্বীকার করে এডিবি কান্ট্রি ডিরেক্টর আরেকজন প্রশ্নকর্তাকে বলেন, সবচেয়ে জরুরি চ্যালেঞ্জ হতে পারে ক্রমাগত উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি। যা ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস করে এবং বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মতে, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির হার মোকাবেলা করা ভবিষ্যতে একটি কঠিন নীতিগত এজেন্ডা হবে।’ দেশকে সরবরাহের সীমাবদ্ধতাগুলোও মোকাবেলা করতে হবে কারণ, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি সরবরাহের দিকের ব্যাঘাতের সাথেও সম্পর্কিত।
তিনি আরো বলেন, ‘এই ধরনের সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য সরকারকে সরবরাহ শৃঙ্খল উন্নত করতে হবে। পাশাপাশি সরবরাহ খরচ কমাতে এবং জ্বালানি সম্পদে বিনিয়োগ করতে হবে।’
Copyright © 2025 পজিটিভ বিডি নিউজ ২৪. All rights reserved.